জ্যোতির বিশ্বকাপে যাওয়ার বিশ্বাস ছিল

বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের জন্য এটি যেন রূপকথার মতো এক অধ্যায়। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে অসাধারণ শুরু করেও শেষদিকে এসে যখন আশা ক্ষীণ হয়ে এসেছিল, তখন ভাগ্য যেন দাঁড়িয়েছিল নিগার সুলতানা জ্যোতিদের পাশে। শেষ পর্যন্ত নিশ্চিত হয়েছে মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপের টিকিট।

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচে টানা জয় তুলে নিয়ে দুর্দান্ত শুরু করেছিল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। এই জয়গুলো তাদের এগিয়ে দিয়েছিল মূল পর্বে খেলার পথে। তবে চতুর্থ ম্যাচে লড়াকু পারফরম্যান্স করেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে বসে বাংলাদেশ। ফলে বিশ্বকাপে খেলার জন্য চোখ রাখতে হয় অন্য ম্যাচগুলোর দিকে।

নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে হারাতে পারলে হিসাবটা পরিষ্কার হতো। কিন্তু বাংলাদেশ বড় ব্যবধানে হেরে যায় পাকিস্তানের বিপক্ষে। এই পরাজয়ের পর রেশমি সুতোর মতো ঝুলে পড়ে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ভাগ্য।

এরপর আশার চোখে তাকিয়ে থাকতে হয় থাইল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচের দিকে। থাইল্যান্ড ১৬৭ রানের লক্ষ্য দেয় ক্যারিবীয়দের। এই রান ১০.১ ওভারের মধ্যে করতে পারলে বিশ্বকাপে খেলতো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু তারা লক্ষ্য ছুঁতে সময় নেয় ১০.৫ ওভার।

ফলাফল—রান রেটের হিসাবে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকায় ভাগ্যের জোরে নিশ্চিত হয় তাদের বিশ্বকাপে খেলা।

সোমবার দেশে ফিরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দলের আত্মবিশ্বাস ও অনুভূতি জানান অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি।

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথমদিকে ভালোই করেছিলাম। যেহেতু শেষ দিকে আমাদের ওই সুযোগটা ছিল যে আমরা কোয়ালিফাই করতে পারব। শুরুতে আমরা ভালো চেষ্টা করেছি, তার পরও প্রথম তিন ম্যাচে ভালো করার ফলে কিন্তু সুযোগ পেয়েছি। তবে দুটি ম্যাচ ভালো করতে পারিনি। থাইল্যান্ডের রান দেখে মনে এতটুকু বিশ্বাস ছিল যে সবকিছু যদি ঠিকঠাক থাকে তাদের যে টার্গেট ছিল সেটা বিশাল। তারপরও তারা যেভাবে করেছে, আল্লাহ আসলে কপালে না রাখলে হতো না।’

২০২২ সালে প্রথমবারের মতো মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। এবার হবে তাদের দ্বিতীয়বারের বিশ্বমঞ্চে অংশগ্রহণ।

চলতি বছরের নভেম্বর মাসে ভারতে অনুষ্ঠিত হবে মেয়েদের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ। স্বাগতিক ভারতসহ অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কা ইতিমধ্যেই সরাসরি মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে। বাছাইপর্ব থেকে তাদের সঙ্গে যুক্ত হলো বাংলাদেশ ও পাঁচ ম্যাচের সবগুলো জিতে আত্মবিশ্বাসী পাকিস্তান।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জায়গা পাওয়া একদিকে যেমন কষ্টের, অন্যদিকে তেমনি আনন্দের। মাঠে লড়াই করার পর ভাগ্যের সহায়তায় মিলেছে সুফল। এবার দেখার বিষয়, দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের মঞ্চে বাংলাদেশ নারী দল কেমন পারফরম্যান্স দেখায়।

এই অর্জন নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের ইতিহাসে একটি গর্বের অধ্যায় হয়ে থাকবে।

Leave a Reply